জয়দীপ মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর, টিপিএফ বাংলা: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শতাব্দী প্রাচীন কালী পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট তহবাজার এলাকার বুড়াকালী মাতার মন্দিরের কালী পুজো। প্রতিবছরের মতো এবছরও দীপান্বিতা অমাবস্যায় বালুরঘাটের বুড়াকালী মাতার পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।
বর্তমান বালুরঘাট বুড়াকালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে অতীতের বয়ে যাওয়া আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই ভেসে ওঠেন বুড়াকালী মাতার বিগ্রহ। এক তান্ত্রিক সেই বুড়াকালী মাতার বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো শুরু করেন। তারপর থেকেই বুড়াকালী মাতার নিত্যপুজো শুরু হয়। লোকমুখে শোনা যায়, সন্ধ্যের পর অপরূপ ফুলের সুগন্ধি পাওয়া যেত ওই মন্দির এলাকা থেকে।
বর্তমানে বুড়াকালী মন্দির থেকে পশ্চিমে অনেকটাই সরে গেছে আত্রেয়ী নদী। কিন্তু ওই সময় নাটোরের রানী ভবানী বজরায় করে এসে আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এই মন্দিরে পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন নাটোরে। রানী রাসমণি একবার দীপান্বিতা অমাবস্যায় এই মায়ের পুজো দিতে এসেছিলেন বলেই জানা যায় বয়স্কদের মুখ থেকে। অনেক ভক্তই বুড়াকালী মাতার মন্দিরকে সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ বলে মনে করেন, তবে এর সঠিক ও উপযুক্ত প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যার কালীপূজা উপলক্ষ্যে মন্দিরে আসার রাস্তা আলোকসজ্জায় ভরিয়ে তোলা হয়। চিরাচরিত নিয়ম ও রীতি বজায় রেখেই অত্যন্ত নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে এই মায়ের পুজো হয়ে আসছে। কালী পুজোর দিন মন্দিরে প্রচুর অন্ন ভোগের হাঁড়ি পড়ে। পুজোতে এখনও পাঁঠা বলি ও বোয়াল মাছ ভোগ দেওয়া হয়। এই পুজোকে ঘিরে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসীই নয় পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুর ও মালদা জেলা থেকেও প্রচুর ভক্ত বা দর্শনার্থী আসে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজোর পরেরদিন সকালে বালুরঘাট শ্রী শ্রী বুড়াকালী মাতা পূজা সমিতির পক্ষ থেকে মা বুড়াকালী মাতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত খিচুড়ি ভোগ ভক্তদের দেওয়া হয়।
